অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
১। অম্ল বা অ্যাসিড কাকে বলে?
উত্তরঃ যে যৌগের অণুতে প্রতিস্থাপনীয় হাইড্রোজেন থাকে এবং ঐ হাইড্রোজেনকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কোন ধাতু বা ধাতুর ন্যায় ক্রিয়াশীল ধনাত্মক যৌগমূলক দ্বারা অংশিক বা সম্পূর্ণ প্রতিস্থাপিত করে লবণ তৈরি করা যায়, তাকে অম্ল বা অ্যাসিড বলে।
২। ক্ষারক কাকে বলে?
উত্তরঃ যে ধাতব অক্সাইড, হাইড্রোক্সাইড ও ধাতুর ন্যায় ক্রিয়াশীল যৌগমূলকের হাইড্রোক্সাইড অম্লের সাথে বিক্রিয়া করে কেবলমাত্র লবণ ও পানি উৎপন্ন করে, তাকে ক্ষারক বলে।
৩। অনুবদ্ধী ক্ষারক বলতে কী বুঝায়?
উত্তরঃ কোন অ্যাসিড তার প্রোটন ত্যাগ করার পর যা অবশিষ্ট থাকে, তাকে ঐ অ্যাসিডের অনুবন্ধী বা কনজুগেট ক্ষারক বলা হয়।
৪। অনুবদ্ধী অ্যাসিড বলতে কী বুঝায়?
উত্তরঃ কোন ক্ষারকের প্রোটন যুক্ত হওয়ার পর যা উৎপন্ন হয়, তাকে ঐ ক্ষারকের অনুবন্ধী বা কনজুগেট অ্যাসিড বলা হয়।
৫। তীব্র ক্ষারক ও দুর্বল ক্ষারক কাকে বলে?
উত্তরঃ তীব্র বা সবল ক্ষারকঃ যে সব ধাতব হাইড্রোক্সাইড যৌগ পানিতে প্রায় সম্পূর্ণরূপে বিয়োজিত হয়ে ঋণাত্মক আয়ন হিসেবে কেবল মাত্র হাইড্রোক্সিল আয়ন প্রচুর পরিমাণে প্রদান করে, তাকে তীব্র বা সবল ক্ষারক বলে।
মৃদু বা দুর্বল ক্ষারকঃ যে সব ধাতব হাইড্রোক্সাইড যৌগ পানিতে সামান্য পরিমাণে বিয়োজিত হয়ে ঋণাত্মক আয়ন হিসেবে শুধু হাইড্রোক্সেল আয়ন অল্প পরিমাণে প্রদান করে, তাকে মৃদু বা দুর্বল ক্ষারক বলে।
৬। HI ও HCl এর মধ্যে কোনটি তীব্র অ্যাসিড?
উত্তরঃ HCl তীব্র অ্যাসিড।
সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
১। ব্রনস্টেড অ্যাসিড ও ক্ষারক কাকে বলে?
উত্তরঃ ১৯২৩ সালে স্বতন্ত্রভাবে জে. এন ব্রন ও টি. এম লাউরি অম্ল-ক্ষারকের প্রোটনীয় মতবাদ প্রকাশ করেন। এ মতবাদটি তাই ব্রনস্টেড-লাউরির প্রোটনীয় মতবাদ নামেও আখ্যায়িত হয়। এ মতবাদ অনুযায়ী যে সকল বস্তু বা অণু ও আয়ন অন্য বস্তুকে প্রোটন দান করে, সেগুলো অম্ল। অপরদিকে যে সকল বস্তু অর্থাৎ অণু ও আয়ন প্রোটন গ্রহণ করে সেগুলো ক্ষারক। অম্ল প্রোটন ত্যাগ করে, আর ক্ষারক সেই প্রোটন গ্রহণ করে। অম্ল বা অ্যাসিড হলো প্রোটন দাতা এবং ক্ষারক হলো প্রোটন গ্রহীতা।
২। অনুবদ্ধী অ্যাসিড ও ক্ষারকের সংজ্ঞা দাও।
উত্তরঃ অনুবদ্ধী ক্ষারকঃ কোন অ্যাসিড তার প্রোটন ত্যাগ করার পর যা অবশিষ্ট থাকে, তাকে ঐ অ্যাসিডের অনুবদ্ধী বা কনজুগেট ক্ষারক বলা হয়।
অনুবদ্ধী অ্যাসিডঃ কোন ক্ষারকের প্রোটন যুক্ত হওয়ার পর যা উৎপন্ন হয়, তাকে ঐ ক্ষারকের অনুবদ্ধী বা কনজুগেট অ্যাসিড বলা হয়।
৩। HCl, HI, HBr ও HF অ্যাসিডের তীব্রতার উর্ধ্ব ও নিম্নক্রম লেখ।
উত্তরঃ HCl, HI, HBr এবং HF ও হাইড্রোসিড অ্যাসিড। সে অনুযায়ী অ্যাসিডগুলোর ঊর্ধ্বক্রম হবে:
HF < HCl < HBr < HI
এবং নিম্নক্রম হবে-
HI > HBr > HCl > HF
রচনামূলক প্রশ্নোত্তর
১। লুইস এর অ্যাসিড – ক্ষারক মতবাদ ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ ১৯৩৮ খ্রিষ্টাব্দে মার্কিন রসায়নবিদ লুইস অ্যাসিড ও ক্ষারক সম্বন্ধে একটি উন্নত মতবাদ প্রদান করেন। লুইস এর মতবাদ অনুসারে, এক জোড়া ইলেকট্রন গ্রহণে সক্ষম পদার্থ মাত্রই যেমন- অণু, য়োগমূলক বা আয়ন প্রত্যেকটিই এক একটি অ্যাসিড। অপর দিকে, এক জোড়া ইলেকট্রন প্রদানে সক্ষম পদার্থ মাত্রই এক একটি ক্ষারক। অন্যভাবে বলা যায়, ক্ষারক ইলেকট্রন দাতা এবং অ্যাসিড হলো ইলেকট্রন গ্রহীতা।
অম্ল ক্ষারক বিক্রিয়া কালে, অম্ল ক্ষারক হতে এক জোড়া ইলেকট্রন গ্রহণের মাধ্যমে সন্নিবেশ বন্ধনী গঠন করে। যেমন- প্রোটন, লুইস এর মতবাদ অনুযায়ী একটি অম্ল এবং অ্যামোনিয়া NH, একটি লুইস ক্ষারক। অ্যামোনিয়া অণুর নাইট্রোজেন পরমাণুতে এক জোড়া নিঃসঙ্গ ইলেকট্রন আছে, যা প্রোটনকে প্রদান করে উভয়ের মধ্যে সন্নিবেশ সন্ধানী গঠন করে।
লুইস অ্যাসিড ইলেকট্রন আকর্ষণ করায় ইলেকট্রনাকর্ষী এবং লুইস ক্ষারক ইলেকট্রন বিকর্ষণ করার এটিকে ইলেকট্রন বিকর্ষী বিকারক হিসেবে গণ্য করা হয়।
২। নিম্নলিখিত পদার্থগুলোর কোনটি অ্যাসিড, কোনটি ক্ষারক কারণসহ লেখ।
উত্তরঃ BF3, NH3, NH4+, Ag+, CaO, SO3, KCN, OH–, H+, Na+ উক্ত পদার্থগুলো অ্যাসিড না ক্ষার তা আমরা অ্যাসিড ও ক্ষারের সংজ্ঞা অনুযায়ী চিহ্নিত করতে পারি।
নিম্নে পদার্থ, অ্যাসিড বা ক্ষার এর কারণসহ চিহ্নিত করা হলো-
পদার্থ পদার্থের ধরণ করণ
BF3 ® এটি অ্যাসিড ® এটি একজোড়া ইলেক্ট্রন গ্রহণ করতে সক্ষম।
NH3 ® এটি ক্ষারক ® এটি একজোড়া ইলেক্ট্রন ত্যাগ করতে সক্ষম।
NH4+ ® এটি অ্যাসিড ® এটি পানি দ্রবীর্ভূত করলে H+ দান করে।
Ag+ ® এটি অ্যাসিড ® এটি ইলেক্ট্রন গ্রহণ করতে পারবে।
CaO ® এটি ক্ষারক ® এটি অ্যাসিডের সাথে বিক্রিয়ায় লবণ ও পানি উৎপন্ন করে।
SO3 ® এটি অ্যাসিড ® এটি একজোড়া ইলেক্ট্রন গ্রহণ করতে সক্ষম।
KCN ® এটি লবণ ® এটি অ্যাসিড ও ক্ষারের বিক্রিয়া উৎপন্ন হয়।
OH– ® এটি ক্ষারক ® এটি ইলেকট্রন ত্যাগ করতে সক্ষম।
H+ ® এটি অ্যাসিড ® এটি ইলেক্ট্রন গ্রহণ করতে সক্ষম।
Na+ ® এটি অ্যাসিড ® এটি ইলেকট্রন গ্রহণ করতে সক্ষম।