ডিপ্লোমা ভর্তি ২০২৩ আবেদন থেকে শুরু করে ক্লাসে হাজির হওয়া। মাধ্যমিক পর্যায়ের এসএসসি/দাখিল অথবা ভোকেশনাল থেকে পাস করা একজন শিক্ষার্থীর জন্য ডিপ্লোমা ভর্তি তথ্য ২০২৩ এর বিস্তারিত। একজন শিক্ষার্থী যখন মাধ্যমিক পাস করে ডিপ্লোমা বা উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি হতে যাবে ঠিক তখন ই মনে হবে যেন মহাসমুদ্রে হাবুডুবু খাচ্ছে নিজেকে। অর্জিত জিপিএর সর্বোচ্চ ব্যবহারের মাধ্যমে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়াটাই এই সময়ে এসে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাাঁড়ায়। আজকের পোস্টটি মূলত তাদের জন্য যারা সঠিক এবং বাস্তবসম্মত তথ্যের সন্ধানে এদিক সেদিক ছুটাছুটি করছেন।
কোথায় ভর্তি হবেন? উচ্চ মাধ্যমিক নাকি ডিপ্লোমা পর্যায়ে।
সাধারণত এই ক্ষেত্রে দুই শ্রেণির শিক্ষার্থী দেখা যায়। একশ্রেণি রয়েছে যারা সাধারণ স্কুল বা মাদ্রাসা পাস করে সাধারন কলেজ বা মাদ্রাসায় উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের এইচএসসি বা আলিম এ ভর্তি ছাড়া বিকল্প কিছু ভাবেন না। আরেকশ্রেণি রয়েছে যারা ভোকেশনাল অথবা জেনারেল অথবা মাদ্রাসা থেকে এসএসসি/দাখিল পাস করে ডিপ্লোমা পর্যায়ের বিভিন্ন টেকনোলজিতে ভর্তি হতে দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় সাধারন স্কুুল বা মাদ্রাসা থেকে পাস করা কিছু শিক্ষার্থী রয়েছে যারা কলেজে এইচএসসিতে ভর্তি হবে নাকি ডিপ্লোমাতে ভর্তি হবে সেটা নিয়ে সন্ধিহান থাকে। সঠিক এবং উপর্যুক্ত সিদ্ধান্ত গ্রহনের পিছনে কিছু প্রতিবন্ধকতাও থাকে। যেমন- পারিবারিক ও আর্থ সামাজিক অবস্থা, ন্যুনতম জিপিএ, আবাসন, ক্যারিয়ার ইত্যাদি। ডিপ্লোমা ভর্তি ২০২৩ এর এ টু জেড অর্থাৎ আবেদন প্রক্রিয়া, যোগ্যতা, খরচসহ সকল তথ্য আজকের এই পোস্টের মাধ্যমে একজন শিক্ষার্থী জানতে পারবে।
ডিপ্লোমা শিক্ষা কী?
ডিপ্লোমা শিক্ষা হল বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ইন্সটিটিউটের চার বছর মেয়াদী একটি কোর্স যা সাধারনভাবে এইচএসসি সমমান হলেও বাস্তাবিক অর্থে এর চাহিদা বা চাকুরীক্ষেত্রে এই ডিগ্রির গুরুত্ব কোন অনেক বেশী। একাধারে একজন একজন শিক্ষার্থ ডিপ্লোমা পাস করে বিএসসি তে ভর্তি হতে পারে আবার সরকারি , বেসরকারি চাকুরীতেও প্রবেশ করতে পারে। আবার উচ্চশিক্ষায় দেশের বাইরেও এর ভাল কদর রয়েছে। ডিপ্লোমা তে সেকল শাখা বা সেকল সেক্টর রয়েছে সেগুলো হলোঃ-
- ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং
- ডিপ্লোমা ইন মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং
- ডিপ্লোমা ইন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং
- ডিপ্লোমা ইন এগ্রিকালচার
- ডিপ্লোমা ইন লাইভস্টক
- ডিপ্লোমা ইন ফরেস্ট্রি
- ডিপ্লোমা ইন ফিশারিজ
এগুলো ছাড়াও বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে উচ্চ মাধ্যমিক সম পর্যায়ে যেসকল কোর্স রয়েছে সেগুলো হলোঃ-
- এইচএসসি ভোকেশনাল
- এইচএসসি বিএমটি (বিজনেস ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড টেকনোলজি)
- সার্টিফিকেট ইন মেরিন ট্রেড।
সরকারি কলেজ বা ইনস্টিটিউটগুলোতে উপরের সবগুলো কোর্সে ভর্তির সুযোগ থাকলেও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং, টেক্সটাইল, ফিশারিজ ও বিএমটিতে ভর্তির সুযোগ রয়েছে।
ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং বা পলিটেকনিক ভর্তি
সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন কলেজ ও ইন্সটিটিউট এর ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং এর উপর চার (৪) বছর মেয়াদী কোর্স রয়েছে। বিভিন্ন টেকনোলজি এর উপর মূলত ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং এর পাঠদান হয়ে থাকে। সরকারি ৫০টি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এ ২৮ টি টেকনোলজি নিয়ে মূলত ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্স। একেক টেকনোলজির রয়েছে একেক রকমের সম্ভাবনা। সময় ও যুগের সাথে তাল মিলিয়ে নিত্য নতুন বিষয় এর উপর চলে হাতে কলমে শিক্ষা। প্রবিধান ২০২২ প্রকাশের পর থেকে সকল টেকনোলজির গুরুত্বই বেড়েছে। শিক্ষার্থীদের এসসিসি রেজাল্ট ও আগ্রহের উপর ভিত্তি করে যে কেও যেকোনো টেকনোলজিতে ভর্তির মাধ্যমে ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ার ডিগ্রি অর্জন করতে পারে। ৪ (চার) বছরে সেমিস্টার বা পর্বভিত্তিতে ৮ (আট) পর্বের কোর্সে রয়েছে মিডটার্ম, পর্ব সমাপনী পরীক্ষা, ড্রয়িং, ব্যাবহারিক পরীক্ষাসহ ইন্টার্নশীপের মতো পরীক্ষা। সামগ্রিক বা এক কথায় বলতে গেলে ভবিষ্যৎ ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার মতো করে একজন শিক্ষার্থীকে গড়ে তোলা হয়। সরকারি ইনস্টিটিউট গুলোর মধ্যে আবার রয়েছে ভিন্নতা।
ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং এর টেকনোলজি সহ বিস্তারিত জানুন এখানে
ডিপ্লোমা ইন মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং
এডবেঞ্চার বা রোমাঞ্চকর জীবনে প্রবেশ করতে চাইলে মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং এর বিকল্প নেই। ডিপ্লোমা ইন মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং হলো কারিগরি শিক্ষা বোর্ড এর অধীনে বলা যায় সবচেয়ে টপ বা শীর্ষস্থানীয় একটি ডিগ্রি। অনেকের আগ্রহের শীর্ষে থাকা ডিপ্লোম ইন মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং এ পড়ার সুযোগ সবার হয় না। এসএসসি তে সর্বোচ্চ রেজাল্টধারী হয়েও অনেকেই চান্স নাও পেতে পারে সরকারি মেরিন ইনস্টিটিউটে। পাশাপাশি আসন সংখ্যার স্বল্পতাও বড় কারণ। অবশ্য আর্থিক অবস্থা ভাল থাকলে বেসরকারি মেরিন ইনস্টিটিউট এ ভর্তির মাধ্যমেও যে কেও মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং এর উপর ডিপ্লোমা করে বিএসসি করতে পারে।
ক্রম | ইনস্টিটিউটের নাম | টেকনোলজি | আসন সংখ্যা |
১ | বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব মেরিন টেকনোলজি, নারায়নগঞ্জ | ১. মেরিন ২. শীপ বিল্ডিং | ৫০ ৫০ |
২ | ইনস্টিটিউট অব মেরিন টেকনোলজি, বাগেরহাট | ১. মেরিন ২. শীপ বিল্ডিং | ৫০ ৫০ |
৩ | ইনস্টিটিউট অব মেরিন টেকনোলজি, চাঁদপুর | ১. মেরিন ২. শীপ বিল্ডিং | ৫০ ৫০ |
৪ | ইনস্টিটিউট অব মেরিন টেকনোলজি, ফরিদপুর | ১. মেরিন ২. শীপ বিল্ডিং | ৫০ ৫০ |
৫ | ইনস্টিটিউট অব মেরিন টেকনোলজি, মুন্সীগঞ্জ | ১. মেরিন ২. শীপ বিল্ডিং | ৫০ ৫০ |
৬ | ইনস্টিটিউট অব মেরিন টেকনোলজি, সিরাজগঞ্জ | ১. মেরিন ২. শীপ বিল্ডিং | ৫০ ৫০ |
ডিপ্লোমা ইন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং
ডিপ্লোমা ভর্তির ক্ষেত্রে ডিপ্লোমা ইন টেক্সটাইল হতে পারে একজন শিক্ষার্থীর স্বপ্ন পূরণের ক্ষেত্র। এপারেল ম্যানুফ্যাকরাচিং, টেক্সটাইল মেশিন ডিজাইন অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স, ওয়েট প্রসেসিং, ইয়ার্ন ম্যানুফেকচারিং, মার্চেনডাইজিং অ্যান্ড মার্কিটিং, জুট ও ফ্যাশন ডিজাইন এর মতো ট্রেড এর সরকারি ১১টি টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট এ মোট ১৮০০ আসনে রয়েছে ভর্তির সুযোগ। তাছাড়াও বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানেও রয়েছে ডিপ্লোমা ইন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এ ভর্তির সুযোগ। কেন ভর্তি হবেন? চাকুরির সুযোগ কেমন সেই বিষয়গুলো জানতে দেখুন
ডিপ্লোমা ভর্তি ২০২৩ এ আজকে এ পর্যন্তই। যেহেতু এটি একটি ধারবাহিক সিরিজ। তাই পরবর্তী পোস্টে অবশিষ্ট বিষয়গুলো নিয়ে পর্যায়ক্রমে আলোচনা করা হবে?